আল্লাহ এমনভাবে করেন যাতে অনেকে বিশ্বাস করে এবং অনেকে সন্দেও করে। বুঝতে হলে ধৈর্য ধরে জানতে হবে।

Writings for Islam:   — Ahsanul Irfan

আল্লাহ এমনভাবে করেন যাতে অনেকে সন্দেহ করে, আবার অনেকে বিশ্বাসও করে।

                     <বুঝতে হলে ধৈর্য ধরে জানতে হবে।>

ধর্মকে ভালোভাবে বুঝতে হলে কেবল জ্ঞান অর্জনের দ্বারা বুঝতে পারবেন না, ভালোভাবে বুঝতে হলে আপনাকে "মোন থেকে" ধর্ম পালন করে দেখতে হবে। দেখবেন আপনার সাথে আশ্চর্যজনক অনেককিছু ঘটবে। 

ধৈর্য ধরুন, আপনি ধীরে ধীরে আপনার প্রায় সবগুলো প্রশ্নেই উত্তর পেয়ে যাবেন।  

[][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][]

((1)) ভালো লাগা, খারাপ লাগা, ন্যায় মনে হওয়া, অন্যায় মনে হওয়া, সখ অনুভব করা, লোভ অনুভব করা...ইত্যাদি সবকিছুই মানুষের মোনের ভেতরে, মোনের বাইরে নয়। টেবিল, চেয়ার, বই...ইত্যাদি জিনিসগুলোর বিদ্যমানতা মোনের বাইরে, মোনের ভেতরে নয়।
অপেক্ষাকৃতভাবে কোনোকিছুকে ভালো লাগা, খারাপ লাগা, লোভ মনে হওয়া ইত্যাদি হয়। (নিচে ব্যাখ্যা আছে।)

((2)) ভালো-খারাপ, ন্যায়-অন্যায়, সখ-লোভ, সুখ-দুঃখ.... এ সবকিছুর মধ্যে ভারসাম্যতা রক্ষা করার প্রয়োজন হয়। 

((3)) ধর্ম নির্ধারণ করে দেয় কোন অনুভূতির কাজ কতোটুকু করা যেতে পারে, এবং কোন ক্ষেত্রে করা যেতে পারে।
______________________________________________________
______________________________________________________
((1))= ভালো লাগা, খারাপ লাগা, ন্যায় মনে হওয়া, অন্যায় মনে হওয়া, সখ অনুভব করা, লোভ অনুভব করা...ইত্যাদি সবকিছুই মানুষের মোনের ভেতরে, মোনের বাইরে নয়। টেবিল, চেয়ার, বই...ইত্যাদি জিনিসগুলোর বিদ্যমানতা মোনের বাইরে, মোনের ভেতরে নয়।
অপেক্ষাকৃতভাবে কোনোকিছুকে ভালো লাগা, খারাপ লাগা, লোভ মনে হওয়া ইত্যাদি হয় :

◼ যে অনেক নিরব তার কাছে কিছুটা দুষ্ট ছেলেকেই খারাপ মনে হবে।
আবার, 
যে অনেক বেশি দুষ্ট তার কাছে কিছুটা কম দুষ্ট ছেলেকেই ভালো মনে হবে।

◼ যে মেয়ে অনেক বেশি ঢেকে থাকে তার কাছে কিছুটা কম ঢেকে থাকা মেয়েকেই খারাপ মনে হবে।
আবার,
যে মেয়ে একেবারেই ঢেকে থাকে না তার কাছে কিছুটা ঢেকে থাকা মেয়েকেই ভালো মনে হবে। 

◼ যে জীবনে অনেক মশা মেরেছে তার কাছে মশা মারা অন্যায় মনে হবে না। 
কিন্তু, 
যে কখনোই মশা মারেনি তার কাছে মশা মারা অন্যায় মনে হবে।

[|] আপনার কাছে যেটা ভালো মনে হয় সেটা অন্যকারো কাছে খারাপও মনে হতে পারে। আবার আপনার কাছে যেটা অন্যায় মনে হয় তা অন্য কারো কাছে ন্যায়ও মনে হতে পারে।

[|] একটি জিনিস ছোটো থেকে ছোটো, আরও ছোটো, আরও ছোটো হতে পারে। চোখে না পড়ার অর্থই এ নয় যে তা উধাও হয়ে গেছে। 
আবার, 
একটি জিনিস বড়ো থেকে বড়ো, আরও বড়ো, আরও বড়ো হতে পারে। চোখে পুরোটা না পড়ার অর্থই এ নয় যে তা বড়ো নয়। 

>> তবে মনে রাখুন, ভালোলাগা, খারাপলাগা...এগুলো মোনের ভেতরে। আর চেয়ার, টেবিল, কলম মোনের বাইরে।

| আমি যদি বলি, "এটি একটি ছোটো লেখা"
প্রশ্ন: কোন লেখার চেয়ে ছোটো?

| আমি যাদি বলি, "এটা একটি বড়ো লেখা"
প্রশ্ন: কোন লেখার চেয়ে বড়ো?

== নিলয়ের লেখার চেয়ে বড়ো, আর ইরফানের লেখার চেয়ে ছোটো।

| আমি যদি বলি, "নাইম অনেক লোভী, সে রঙিন কাপড় পরে থাকে, সাদা কাপড় তেমন পরে না"
প্রশ্ন: নাইম কার চেয়ে বেশি লোভী? 

== যে সব সময় সাদা কাপড় পরে থাকে তার তুলনায় নাইমকে লোভী মনে হবে। 

______________________________________________________

((2))== ভালো-খারাপ, ন্যায়-অন্যায়, সখ-লোভ, সুখ-দুঃখ.... এ সবকিছুর মধ্যে ভারসাম্যতা রক্ষা করার প্রয়োজন হয়। 

আল্লাহ অনেক নবি পাঠিয়েছেন। তাহলে তিনি জানেন কীভাবে একজন মানুষকে বানালে সে মানুষ জ্ঞানী ও ভালো হয়। তাহলে যারা খারাপ তাদেরকেও আল্লাহই বানিয়েছেন। এ জগতে ভালো-মন্দ, রাত-দিন, পোকামাকড়-ফুলফল এসবকিছু প্রয়োজনে, এ সবকিছুতে প্রয়োজনীয়তা প্রাধান্য পায়, সঠিক ও বেঠিক নয়। এগুলোর ভারসাম্যতা ঠিক রাখার প্রয়োজন হয় এবং এগুলো অনেক গভীরভাবেও আলোচনা করা যায়।

> অমিলগুলোর ভেতরও মিল আছে। যেমন: একই রকমের রোগ একাধিক মানুষের হওয়া, একই রকমের ভুল অনেক জায়গায়...
______________________________________________________

((3))== ধর্ম নির্ধারণ করে দেয় কোন অনুভূতির কাজ কতোটুকু করা যেতে পারে, এবং কোন ক্ষেত্রে করা যেতে পারে :

যেহেতু মানুষের সকল অনুভূতি অপেক্ষাকৃতভাবে ভালোলাগা, অন্যায়লাগা, খারাপলাগা, লোভলাগা ইত্যাদি হয় তাই আমাদের জানতে হবে কোন অনুভূতির কাজ কতোটুকু করা যেতে পারে। 

<?> যেহেতু প্রাণী ও উদ্ভিদ হত্যাও অন্যায় তাহলে কতোটুকু অন্যায় করা যেতে পারে?

[|] অনেকে বাধ্য হয়ে মানুষ হত্যা করলেও তাকে আটকানো প্রয়োজন এবং শাস্তি দেয়া প্রয়োজন, কারণ না করলে অন্যায়কারী আবারও আরেকজনকে হত্যা করতে পারে। কিন্তু অন্যায়কারীকে শাস্তি দিলে সে কষ্ট বুঝে পরে সাধারণত আর হত্যা করবে না। কতোটা শাস্তি দেয়া প্রয়োজন হবে? 

<?>  নিজের স্ত্রীর দিকে তাকানোও খারাপ মনে হতে পারে, দাঁড়িয়ে থেকে কথা বলাও খারাপ মনে হতে পারে। তাহলে কতোটুকু খারাপ হওয়া যেতে পারে? (এই খারাপের ক্ষেত্রে আসলে আনন্দই মানুষের কাছে খারাপ মনে হয়, যে মেয়ে বেশি আনন্দ করে তার কাছে কম আনন্দ করা মেয়েকে ভালো মনে হবে, আর যে মেয়ে কম আনন্দ করে তার কাছে বেশি আনন্দ করা মেয়েকে খারাপ মনে হবে।)

<?> একটি নষ্ট বোতল ফেলে দেয়াও অপচয়, পুরোনো রুমাল ফেলে দেয়াও অপচয়। কতটুকু অপচয় করা যেতে পারে? 

<?> কম আনন্দে কম লোভ, বেশি আনন্দে বেশি লোভ। আনন্দই লোভনীয়। কতটুকু লোভী হলে সমস্যা নেই?

|| কোনো কিছুই অতিরিক্ত করা ঠিক নয়, তা "নামাজ" হলেও। ধরুন আপনি সারাদিন সুধু নামাজই পড়েন আর অন্য কোনো কাজই করেন না। এমনটা করা ঠিক হবে না। আবার, ধরুন আপনি ১ ওয়াক্ত নামাজও পড়ছেন না, সেটাও অতিরিক্ততা করা।

|| ইসলামে যেগুলো হারাম করা হয়েছে সেগুলো হারাম করার পেছনে কোনো না কোনো ক্ষতির দিক আছে বলে তা হারাম। যেমন: ইসলামে বাদ্য, পোর্ণভিডিও, মদ ইত্যাদি হারাম, কারণ এগুলো অনেক আসক্তির।

|| যারা অতিরিক্ত আনন্দ করে তারা অনেক অসহনশীল হয়, তারা তেমন বাধ্যগত হয় না। তাদেরকে যতো বেশি দেয়া হোক না কেন তাদের অনেকে সন্তুষ্ট থাকে না। অপরদিকে যারা কম আনন্দ-উল্লাসী হয়, তারা অনেক বাধ্যগত ও ত্যাগী হয়। তাদের ত্যাগ করার অভ্যাস থাকার কারণে তারা অন্যদেরকে সহজেই দান করতে পারে, ক্ষমা করতে পারে, সাহায্য করতে পারে ইত্যাদি। 

🟥 ধর্মগুলো আমাদের নানা মান দন্ড নির্ধারণ করে দিয়েছে কোনটা কতটুকু করা যেতে পারে। 

[][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][]

⚫ আল্লাহ এমনভাবে করেন যাতে অনেকে সন্দেহ করে, আবার অনেকে বিশ্বাসও করে। ফলে যারা ধৈর্যশীল, সহনশীল ও যাদের আধ্যাত্মিক ঘটনার অভিজ্ঞতা আছে তারা বিশ্বাস করে, আর যারা অসহনশীল, অধৈর্যশীল ও যারা ভালো না হওয়ার কারণে তাদের আধ্যাত্মিক কোনো ঘটনার অভিজ্ঞতা নেই তারা সন্দেহ করে। 

◾অনেকে মনে করে প্রকৃতিকে কেউ বানায়নি। 
আবার, অনেকে মনে করে আল্লাহকে কেউ বানায়নি। 

◾অনেকে কষ্টের জন্য আল্লাহ তায়ালার অস্তিত্বে সন্দেহ করে।
আবার, অনেকে সুখের জন্য আল্লাহ তায়ালার অস্তিত্বে বিশ্বাস করে। 

◾অনেকে মনে করে "যেহেতু মুহাম্মদ (স.)-এর সময় আরবরা কাব্য রচনায় অনেক বিখ্যাত ছিলো তাই মুহাম্মদ (স.) নিজেই হয়তো কোরআন লিখেছেন।
আবার, অনেকে মনে করে " না, সে সময় আরবরা কাব্য রচনায় বিখ্যাত ছিলো বলেই যে মুহাম্মদ (স.) কোরআন লিখেছেন এমন নয়।" 
  
◾অনেকে দুর্ঘটনার জন্য আল্লাহকে অবিশ্বাস করে। 
আবার অনেকে সৌভাগ্যের জন্য আল্লাহকে বিশ্বাস করে। 
.
.
.

সব সময় দুটি দিক থেকেই যায়; বিশ্বাস ও সন্দেহ।
মানুষ ব্যক্তিগত জীবনের ঘটনাগুলোতেও এ দুটি দিক দেখা যায়; বিশ্বাস ও সন্দেহ। ফলে যারা ধৈর্যশীল, সহনশীল ও যাদের আধ্যাত্মিক ঘটনার অভিজ্ঞতা আছে তারা বিশ্বাস করে, আর যারা অসহনশীল, অধৈর্যশীল ও যারা ভালো না হওয়ার কারণে তাদের আধ্যাত্মিক কোনো ঘটনার অভিজ্ঞতা নেই তারা সন্দেহ করে।

.............

[][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][]

⚫ কিছু উপদেশ ও উপদেশ সম্পর্কিত কথা :

<?> আল্লাহ পৃথিবীতে মানুষকে সাহায্য করেন, কিন্তু কাউকে সম্পূর্ণভাবে বিপদমুক্ত করেন না। তাহলে আল্লাহ পৃথিবীতে মানুষের কোন ধরনের জীবন চান? 

= আল্লাহ মানুষের যে জীবন চান তাতে মোটামোটি সুখ থাকবে, কিন্তু কষ্টই বেশি থাকবে।

(A) অনেক কষ্ট আল্লাহ মানুষকে ইচ্ছাকৃতভাবেই দেন, যার ভালো ফল আল্লাহ ইহকালেই দেবেন অথবা পরকালে দেবেন। 

(B) আবার, অনেক কষ্ট আল্লাহ মানুষকে মানুষের কোনো ভুল কৃত কাজের ফল হিসেবে দেন।

(C) আবার, অনেক কষ্ট আল্লাহ আপনাকে রক্ষা করতে অথবা অন্য কাউকে রক্ষা করতে দেন।

(D) আবার, অনেক কষ্ট মানুষকে পরীক্ষা করার জন্যও দেন।

◼ কিছু উপদেশ :

(()) কোনোকিছু নিয়েই অতিরিক্ততা করবেন না।

১. কষ্টকে "অতিরিক্ত" ভয় করবেন না।
২. কোনো কিছুই "অতিরিক্ত" সিরিয়াসলি নেবেন না। যেমন: কাউকে অতিরিক্ত জোর করা, অতিরিক্ত ভয় করা, অতিরিক্ত স্বাধীনতা দেয়া ইত্যাদি। 
৩. আসক্তির জিনিসগুলো বর্জন করবেন। 
৪. সবাইকে ভালো বানানো, সবাইকে সুন্দর বানানো, সবাইকে শিক্ষিত বানানো এ চেষ্টাগুলো করবেন না, কারণ এগুলো কখনো হবে না।
৫. কোনোকিছুই সবসময় ভালো লাগে না, তবে সুখের কোনোকিছু অর্জন করা উত্তম। কিন্তু নির্দিষ্ট কোনো সুখকে "অতিরিক্ত" সিরিয়াসলি নেবেন না।
৬. অতিরিক্ত মজা করা, অতিরিক্ত ভোগ বিলাসিতা করা, অতিরিক্ত নিরব থাকা.... এগুলো সমস্যাজনক।
৭. অহংকার, অবহেলা, হিংসা, শো অফ এগুলো করবেন না, সত্যিই ক্ষতি হতে পারে। এবং "বেশি" ভাব নেবেন না (কারো সাথে মজা করে কিছুটা করা (ভাব) ঠিক আছে)। 
৮. প্রত্যেকের কষ্ট বুঝার চেষ্টা করবেন, এবং ক্ষমা করা গেলে ক্ষমা করবেন। > ভালো মানুষ খারাপ মানুষের কষ্ট বুঝে না, আবার খারাপ মানুষ ভালো মানুষের কষ্ট বুঝে না। নরম মানুষ কঠোর মানুষের কষ্ট বুঝে না, কঠোর মানুষ নরম মানুষের কষ্ট বুঝে না।
৯. দান করবেন: তা জ্ঞানের হোক, টাকার হোক অথবা অন্যকিছুর।

[] আপনি যদি অন্যদেরকে দান করতে ভালোবাসেন তাহলে আল্লাহ সত্যিই আপনাকে অনেককিছু দিতে পারেন।

"আপনি দিলে, আপনাকেও দেয়া হবে।" 

 কিন্তু অনেক সময় আল্লাহ আপনাকে দেবেন না (A), (B), (C), (D) এ কয়টির যে কোনো একটি অথবা অকাধিক কারণে।

১০. আল্লাহর ইবাদত করবেন — যতোটা সম্ভব হয়।

[] কুরআন ও হাদিসে আল্লাহ কোথাও বলেননি যে তিনি এমনভাবে করেন যাতে অনেকে সন্দেহ করে, আবার অনেকে বিশ্বাসও করে। তাই এটা ধরে নেয়া। আমরা কি ধরে নিতে পারি? = বলতে পারছি না। ইসলামের নানা বিধান আছে যেগুলো সম্পর্কে আল্লাহ সরাসরি কিছু বলেননি তবে মানুষের ধরে নিতে হয়েছে।
___________________________________________________________
⚫ Follow my pages, accounts and websites :

Philosophy, Islam and Science In  Bangla (Facebook page and Instagram)
Intelligent Quotes in Bangla (Facebook page and Instagram)
Shukkho English grammar (Facebook page)
Shukkho Bangla to English sentences (Facebook page)
Science Ghor (Facebook page and Instagram)
Learn correct Bangla (Blogger)

#ahsanul_irfan #islam #philosophy #ফিলোসোফি #আহসানুল_ইরফান

Comments

Popular posts from this blog

অলৌকিক ঘটনা কি কেবল নবি রসূলদের সাথেই ঘটে?

ইসলামে চুরির শাস্তি

দার্শনিক নানা বিষয় একত্রে :