শব্দ বিভ্রান্তি

শব্দ বিভ্রান্তি:

১. "যতোটুকু পারো করো, বাকিটা আল্লাহর ভরসা।"

কেউ বলতে পারে, "নাহ, পুরোটাই আল্লাহর ভরসা।"। হ্যাঁ, পুরোটাই আল্লাহর ভরসা, কিন্তু এখানে যা বোঝানো হচ্ছে তা হলো "যতোটুকু পারার করো, তুমি যা করবে তারপর বাকিটা আল্লাহ দেখবেনি", এটা কথা বলার এক ধরন মাত্র।

 ২. "ঈমান অর্জন করতে খুব বেশি জ্ঞানের প্রয়োজন হয় না, আল্লাহ চাইলেই একজনের অন্তরে ঈমান দিতে পারেন।"

কেউ বলতে পারে, "নাহ, তুমি ভুল, 'আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে যারা জ্ঞানী তারাই কেবল তাকে ভয় করে' (৩৫:২৮)। এ আয়াতে জ্ঞানী বলতে যারা কুরআন সুন্নাহর আলোকে জ্ঞানী, যেমন: একজন ধার্মিক কৃষক বিজ্ঞানী দার্শনিকদের মতো জ্ঞানী মানুষ নাও হতে পারে, কিন্তু তার ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান আছে ফলে সে জ্ঞানী। 

 ৩. "যেকোনো কিছুর অতিরিক্ততা সমস্যাজনক, অতিরিক্ত ইবাদত করাও ঠিক নয়।" 

কেউ বলতে পারে, "নাহ, নবি রসূলরা আল্লাহর অনেক ইবাদত করতেন"। ওপরে "অতিরিক্ত" বলতে বাড়াবাড়ি করা বোঝানো হচ্ছে, কেউ ধরুন সারাদিন শুধু নামাজই পড়ে, অন্য কিছুই করে নাহ, এমন অতিরিক্ততা।

 ৪. "নারীকে চারটি কারণে বিবাহ করা হয়: তার ধন-সম্পদের জন্য, তার বংশ-মর্যাদার জন্য, তার সৌন্দর্যের জন্য এবং তার ধার্মিকতার জন্য। তুমি ধার্মিক নারীকে বিয়ে করো—তোমার হাত ধূলিমলিন হোক (অর্থাৎ তুমি সফল হও)।"

— সহীহ বুখারী (হাদীস নং ৫০৯০), সহীহ মুসলিম (হাদীস নং ১৪৬৬)

কেউ বলতে পারে, "ধরুন, আমি একজন নারীকে বিয়ে করতে চাই কারণ সে নারী গরিব, তাকে বিয়ে করলে তার উপকার হবে, এক্ষেত্রে তো আমি ওপরের একটি কারণেও বয়ে করছি না"। হ্যাঁ, ঠিক। ওপরে যা বোঝানো হচ্ছে তা হলো "সাধারণত" একটি নারীকে চারটি কারণে বিয়ে করা হয়।

 ৫. "তুমি নামাজ পড়েও কী, না পড়েও কী, তুমি তো মানুষের সাথে খারাপ ব্যবহার করোই।"। 

কেউ বলতে পারে "নাহ, সে যেহেতু নামাজ পড়ে, তাই সে কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করলেও জান্নাতে যাওয়ার সম্ভাবনা রাখে, তাই দুটা এক নয়"। এখানে "পড়েও কী, না পড়েও কী" বলতে বোঝানো হচ্ছে "সে পড়েও খারাপ ব্যবহার করে, আবার না পড়েও খারাপ ব্যবহার করে।

.

.

.

Comments

Popular posts from this blog

অলৌকিক ঘটনা কি কেবল নবি রসূলদের সাথেই ঘটে?

ইসলামে চুরির শাস্তি

দার্শনিক নানা বিষয় একত্রে :