Posts

এটা মানেই ওটা নয়

এটা মানেই ওটা নয় — আহসানুল ইরফান (কুরআন, হাদিসের সরাসরি অনুবাদ নয়, সুক্ষ্ম ব্যাখ্যার ওপর নির্ভর করে আমি যতোটুকু বুঝতে পারলাম তার ভিত্তিতে লেখা।) [] যাচাই করে দেখতে হবে তার মানেই এ নয় যে আপনি সবই যাচাই করে দেখবেন। ধরুন কেউ আপনাকে চড় মারলো আর আপনি তখন নেটে সার্চ দিলেন "প্রতিশোধ তোলা হালাল নাকি হারাম?"। কিছু জিনিস আপনাকে নিজের নৈতিকতা অনুযায়ী বিবেচনা করতে হবে, আর কিছু জিনিস আপনাকে কুরআন হাদিস থেকে জানতে হবে। আবার, কিছু জিনিস আপনাকে যাচাই করতে হবে, আর কিছু জিনিস আপনাকে বিশ্বাসের ওপর ছেড়ে দিতে হবে বা বিশ্বাস করে নিতে হবে। হিন্দু ধর্ম বলে— সব ধর্ম ত্যাগ করে কৃষ্ণের শরণাগত হও। ইসলাম বলে— আল্লাহর কাছে মনোনীত একমাত্র ধর্ম ইসলাম। খ্রিস্টধর্ম বলে— যিশু বলেন, "আমিই পথ ও জীবন, আমি ছাড়া কেউ পিতার (স্রষ্টার) কাছে যেতে পারবে না।" কিন্তু আগের কিতাবগুলো অনেককিছু —সবকিছু নয়— বিকৃত হয়ে গেছে। তাই সেগুলো আর পুরোপুরি সঠিক নেই। আপনি যদি কোনো লেখকের বই পড়তে চান, আপনি তো লেটেস্ট সংস্করণই কিনবেন, তাই না? মুসলিমরা বিশ্বাস করে সেই লেটেস্ট সংস্করণ হলো কুরআন। আগের কিতাবগুলো একসময় সম্পূর্ণভাবে সঠি...

আমি কুরআন-হাদিসের সরাসরি অনুবাদ নয় — সূক্ষ্ম ব্যাখ্যার দ্বারা জান্নাত-জাহান্নামের শাস্তির ব্যাপারে যতোটুকু বুঝতে পারলাম তা হলো

আমি কুরআন-হাদিসের সরাসরি অনুবাদ নয় — সূক্ষ্ম ব্যাখ্যার দ্বারা জান্নাত-জাহান্নামের শাস্তির ব্যাপারে যতোটুকু বুঝতে পারলাম তা হলো— কেউ একজন কেবল অমুসলিম পরিচয়ের জন্য বা বলতে পারি সে যে সমাজে অমুসলিম নামে পরিচিত কেবল তার এ পরিচয়ের জন্য জাহান্নামে যাবে, ব্যাপারটা এমন নয় (সে তার কর্মের জন্য জাহান্নামে যাবে)। আবার কেউ একজন কেবল তার নবি পরিচয়ের জন্য বা সমাজে যে তিনি নবি নামে পরিচিত কেবল এই পরিচয়ের জন্য জান্নাতের উচু স্থান পাবেন, এমনও নয় (তিনি তার কর্মের জন্য জান্নাতের উচু স্থান পাবেন)। আল্লাহ একজন মানুষের জীবনের পরিস্থিতি, সুযোগ, বোঝাপড়া, অনিচ্ছাকৃতভাবে করা, বুঝে করা— এসব কিছু মিলিয়ে তার বিচার করবেন, এবং সে বিচার অনুযায়ী তাকে জান্নাতের উচ্চ স্থান, নিম্ন স্থান, অথবা জাহান্নামের উচ্চ স্থান, নিম্ন স্থান-কাউকে বেশি, কাউকে কম দেবেন। আল্লাহ মিযান দিয়ে পাপ-পুণ্যের হিসাব করবেন— তার মানে ব্যাপারটা এমন নয় যে আল্লাহ মেপে দেখার ক্ষেত্রে মিযানের ওপর নির্ভরশীল। স্রষ্টা যে এক— এটা একটি স্বাভাবিক প্রবৃত্তি বা বিশ্বাস, সবাই এই বিশ্বাস নিয়ে জন্ম নেয়। কেউ যখন সমাজের ভুল বিশ্বাস দ্বারা প্রভাবিত হয়ে, বা না বুঝে এই...

গালি দেয়া, তিরস্কার করা, ধমক দেয়া, অপমান করা, ব্যঙ্গ করা, শাসন করা... এগুলোর ভেতর পার্থক্য আছে।

গালি দেয়া, তিরস্কার করা, ধমক দেয়া, অপমান করা, ব্যঙ্গ করা, শাসন করা... এগুলোর ভেতর পার্থক্য আছে। [1] ইসলামে শুধু অপমান বা গালির কারণে কাউকে মারধর করা বৈধ নয়, তবে জালিমের বিরুদ্ধে বদদোয়া বৈধ তবে উত্তম নয়, খারাপ শব্দ ব্যবহার না করে অপমানের জবাব অপমান দিয়ে করা বৈধ তবে উত্তম নয়, প্রতিশোধের দোয়া করা বৈধ কিন্তু উত্তম নয়। > বড়োদের তুই তুকারি করা জায়েজ নয়, যদিও সে অন্যায়কারী হয়ে থাকে। [2] অন্যায়কারীকে নিয়েও ব্যঙ্গ করা নিষেধ। [3] তিরস্কার ও কুটুক্তি করা এক নয়। তিরস্কার অনেক ক্ষেত্রে জায়েজ, কিন্তু কুটুক্তি কোনো ক্ষেত্রেই জায়েজ নয়। [4] কোনো ছোটো বাচ্চা যদি বেশি দুষ্টুমি করে ইসলাম অনুযায়ী কি তাকে মারা যেতে পারে? (না) [5] স্ত্রীকে কি মারা যেতে পারে? (না) ____________________________________________________ কেউ যতোবারই আপনাকে গালি বা অপমান করুক না কেন, কেবল মুখের কথার জবাবে মারধর করা ইসলাম অনুযায়ী বৈধ নয়। এভাবে হাত তোললে আপনি নিজেও গোনাহে লিপ্ত হবেন। কুরআনে আল্লাহ বলেন, "আর ভালো কাজ ও মন্দ কাজ সমান নয়। তুমি মন্দকে সেই উত্তম পদ্ধতিতে প্রতিহত করো—তাহলে দেখবে যার সাথে তোমার শত্রুতা আছে সে যেনো অ...

ইসলামে শুধু অপমান বা গালির কারণে কাউকে মারধর করা বৈধ নয়, তবে জালিমের বিরুদ্ধে বদদোয়া বৈধ তবে উত্তম নয়, খারাপ শব্দ ব্যবহার না করে অপমানের জবাব অপমান দিয়ে করা বৈধ তবে উত্তম নয়:

ইসলামে শুধু অপমান বা গালির কারণে কাউকে মারধর করা বৈধ নয়, তবে জালিমের বিরুদ্ধে বদদোয়া বৈধ তবে উত্তম নয়, খারাপ শব্দ ব্যবহার না করে অপমানের জবাব অপমান দিয়ে করা বৈধ তবে উত্তম নয়, প্রতিশোধের দোয়া করা বৈধ কিন্তু উত্তম নয়: কেউ যতোবারই আপনাকে গালি বা অপমান করুক না কেন, কেবল মুখের কথার জবাবে মারধর করা ইসলাম অনুযায়ী বৈধ নয়। এভাবে হাত তোললে আপনি নিজেও গোনাহে লিপ্ত হবেন। কুরআনে আল্লাহ বলেন, "আর ভালো কাজ ও মন্দ কাজ সমান নয়। তুমি মন্দকে সেই উত্তম পদ্ধতিতে প্রতিহত করো—তাহলে দেখবে যার সাথে তোমার শত্রুতা আছে সে যেনো অন্তরঙ্গ বন্ধু হয়ে যাবে।" — (সূরা ফুসসিলাত ৪১:৩৪) [] রাসূল ﷺ–এর সহনশীলতার শিক্ষা: রাসূলুল্লাহ ﷺ–কে মক্কার কাফিররা বহুবার গালি দিয়েছে, অপমান করেছে, এমনকি আবর্জনা ফেলে দিয়েছে। কিন্তু তিনি কখনো প্রতিশোধ নেননি। তিনি ধৈর্য ধারণ করেছেন এবং সাহাবিদেরও ধৈর্যের দিকে উৎসাহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, "মুমিনদের মধ্যে সে-ই উত্তম, যে মানুষের সাথে মিশে এবং তাদের কষ্ট সহ্য করে।" — (সুনান আত-তিরমিজি, হাদিস২৫০৭; সহিহ) [] নবি ﷺ সাধারণত অভিশাপ দিতেন না: সাহাবারা বলেন, "রাসূলুল্লাহ ﷺ কখনো অ...

কোনো ছোটো বাচ্চা যদি বেশি দুষ্টুমি করে ইসলাম অনুযায়ী কি তাকে মারা যেতে পারে?

কোনো ছোটো বাচ্চা যদি বেশি দুষ্টুমি করে ইসলাম অনুযায়ী কি তাকে মারা যেতে পারে? = কুরআন থেকে স্নেহ ও দয়ার শিক্ষা: "আল্লাহর রহমতেই তুমি তাদের প্রতি কোমল হলে। তুমি যদি রূঢ় ও কঠিন হৃদয়ের হতে, তবে তারা তোমার চারপাশ থেকে সরে যেতো।" — (সূরা আলে ইমরান ৩:১৫৯) শিশুদের প্রতিও আচরণে কোমলতা ও দয়া প্রদর্শনের শিক্ষা এখান থেকে প্রমাণিত। হাদিস থেকে, রাসূল ﷺ শিশুদের প্রতি দয়া করতেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, "যে ছোটোদের প্রতি দয়া করে না এবং বড়োদের সম্মান করে না, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।" — (সুনান আত-তিরমিজি ১৯২০, সহিহ) নামাজ শেখানোর শিক্ষা রাসূল ﷺ বলেছেন, "তোমরা তোমাদের সন্তানদের সাত বছর বয়স হলে নামাজ পড়ার নির্দেশ দাও, আর দশ বছর বয়স হলে (না পড়লে) হালকা শাসন করো, এবং তাদের শয্যা আলাদা করো।" — (আবু দাউদ ৪৯৫, সহিহ) এখানে ১০ বছর বয়স পর্যন্তও মারধরের কথা বলেননি। শুধু ১০ বছর হলে নামাজে গাফিল হলে হালকা শাসন করার অনুমতি দিয়েছেন—এটিও "আঘাতমূলক মার" নয়, বরং শাসনমূলক ও শিক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্যে। শিশুদের মারধরের নিন্দা এক সাহাবী বললেন: আমি কখনো রাসূল ﷺ–কে কোনো স্ত্রী, কোনো দাস ...

যতো বেশি জানা যায় ততো ভালো, কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে বেশি জানার প্রয়োজন নেই এটাও জানা প্রয়োজন।

"যতো বেশি জানা যায় ততো ভালো। যে যতো বেশি জানবে, তার ততো কম ভুল হবে। সর্বজ্ঞ হলেন আল্লাহ, যার কোনো ভুল হয় না। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে যে বেশি জানার প্রয়োজন নেই—এটাও জানা প্রয়োজন। আবার কেউ যদি কম জানার কারণে ভুল করে, তাহলে তাকে অনেক ক্ষেত্রে তিরস্কার করার প্রয়োজন নেই—এটাও জানা প্রয়োজন।"  — আহসানুল ইরফান

ডাইমেনশন

ডাইমেনশন: — আহসানুল ইরফান [] কখন, কেন, কীভাবে, কোথায়, কোন ক্ষেত্রে, কোন দিক থেকে, কতোটা... > কেউ ধরুন বললো, "আমাদের সম্পর্ক থাকবে তসবির সাথে, নামাজের সাথে, মসজিদের সাথে... জন্মদিন পালন করার সাথে নয়, গায়ে হলুদের সাথে নয়..." > আবার কেউ বললো, "না, আনন্দেরও প্রয়োজন আছে। অনেক আলেম-ওলামা জন্মদিন পালন করা হারাম মনে করেন না। কেউ যদি কিছু সময়ের জন্য আনন্দ হিসেবে জন্মদিন পালন করে, আর গায়ে হলুদে যদি হারাম কিছু না থাকে, তাহলে পালন করা যাবে।" তাহলে কে সঠিক? দুজনই সঠিক। কিন্তু দুজন ভিন্ন দুই বিষয় বোঝাচ্ছেন। > কেউ যদি বলে, ধর্মের ফলে মানুষের ভেতর সংঘাত তৈরি হয়, মানুষের মধ্যে বিদ্বেষ তৈরি হয়— তাই ধর্ম পালনের প্রয়োজন নেই। > আর কেউ যদি বলে, ধর্ম পালনের ফলে মানুষের ভেতর মিল তৈরি হয়, মানুষ সৎ আচরণ করে— তাই ধর্ম পালনের প্রয়োজন আছে। তাহলে কে সঠিক? দুজনই দুই ক্ষেত্রে সঠিক। [] কখন, কেন, কীভাবে, কোথায়, কোন ক্ষেত্রে, কোন দিক থেকে, কতোটা... <?> যার কাছে যেটা সঠিক মনে হয়, সে যদি সেটা না করে, তাহলে কি পাপ? নাকি যার কাছে যেটা সঠিক মনে হয়, সেটা প্রকৃতপক্ষে সঠিক না হলেও তা করা পা...